সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, স্নাতক চতূর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের রিসার্চ গ্র্যান্ট প্রদান করা হবে। এই গ্র্যান্ট প্রদানের দায়িত্ব পালন করবে বুয়েটের Research and Innovation Center for Science and Engineering (RISE)। বুয়েট সিন্ডিকেট সভায় RISE অনুমোদিত হয় সেপ্টেম্বর,২০২০ এবং অক্টোবর, ২০২০ থেকে এটি তার কার্যক্রম শুরু করে। RISE মূলত তিন ধরনের কাজ করে। 1. Support & Promote Research Activities 2. Develop Partnership, Collaboration & Linkage 3. Incubate & Transfer Technology.
প্রথম ধরনের কাজের অংশ হিসেবে, গত ২৭ জুলাই এক অনলাইন মিটিং এর মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ে রিসার্চ গ্র্যান্ট প্রদানের লঞ্চিং করা হয়। গ্র্যান্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীদের অবশ্যকভাবে থিসিস সুপারভাইজর শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে রিসার্চ পরিচালনা করার শর্তারোপ করা হয়। রিসার্চ গ্র্যান্ট এর জন্য চতূর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছে নির্ধারিত ফরম্যাটে আনুমানিক বাজেট সহ দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। বাজেটে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা চাইতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এই এক লাখ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা একজন শিক্ষার্থী নিজের পারিশ্রমিক বাবদ রাখতে চাইতে পারবেন।
লঞ্চিং প্রোগ্রামে কেমিক্যাল ও ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন, প্রফেসর মোহাম্মদ তামিম, বলেন, “আমার মনে হয় স্নাতকে এই ধরনের রিসার্চ গ্র্যান্ট দেয়া বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথম।” তিনি আরও যোগ করেন, “ আমি আশা করব, শিক্ষার্থীরা এই সুযোগটা গ্রহন করবে এবং গবেষণা কাজে আরও উদ্বুদ্ধ হবে।” আর্কিটেকচার ও প্ল্যানিং ফ্যাকাল্টির ডিন, প্রফেসর ইসরাত ইসলাম, বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে বেশ ভালো মানের কাজ করে, অনেক শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ভালমানের জার্নাল পাবলিশ করে। কিন্তু আমরা ইউনিভার্সিটি থেকে ঐভাবে রিকগনিশন বা আর্থিক সহায়তা কিছুই দিতে পারিনা।” এছাড়া তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন, “তোমরা সবাই এখানে এপ্লাই করো। যদি ফান্ডিং পেয়ে যাও, তাহলে দুইদিক থেকে লাভ আছে। একটা হলো আর্থিক লাভ সাথে ভবিষ্যতে উচ্চতর শিক্ষার জন্য রেজ্যুমি তে বিরাট ভূমিকা রাখবে।” সার্বিকভাবে তিনি শিক্ষার্থীদের রিসার্চ গ্র্যান্টের জন্য আবেদন করার আহ্বান করেন।
সবার শেষে কথা বলেন, বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর, প্রফেসর সত্য প্রসাদ মজুমদার। তিনি বলেন, “রিসার্চের বীজ হচ্ছে আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী। আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ছাড়া বুয়েট চলবেনা। কারণ, বুয়েটের কার্যক্রম শুরুই হয় আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের দিয়ে। আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা অনেক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাই। এখন এই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। তোমাদের মধ্যে রিসার্চের যে বীজ আছে তা গাছে রূপান্তর করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই রিসার্চ গ্র্যান্ট একটা সামান্য এপ্রেসিয়েসন। এখন এইটা সরকার থেকে নিলেও পরবর্তীতে ইন্ডাস্ট্রি থেকে নেয়া হবে। ” তিনি জানান, বিভিন্ন লোকাল ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডাস্ট্রি ছাড়াও বুয়েটের বিশাল অ্যালাম্নাই এসোসিয়েসন রিসার্চ গ্র্যান্ট দিতে রাজি আছে।
পরিশেষে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের ছাড়া রিসার্চ হবেনা। শিক্ষার্থীদের নিয়েই রিসার্চ করতে হবে। ভবিষ্যতে গ্র্যান্ট আরও বাড়ানো হবে। সেই সাথে সরকারের উপর চাপ কমাতে ইন্ডাস্ট্রি থেকে নেয়া হবে।”
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!