২০১৯ এর ২৯ এপ্রিল এর সকালে নতুন ব্যাচ-১৮ এর পদচারনায় মুখরিত হয়েছিলো বুয়েট ক্যাম্পাস।সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর এই দিনটিকে এন্ট্রান্স ডে হিসেবে পালন করার ইচ্ছা থাকলেও মহামারী করোনার জন্য তা আর করা হয়ে ওঠে নি।তবে কিশোরকবি সুকান্তের “আঠারো বছর বয়স” কবিতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েই হয়ত ১৮ ব্যাচের ২য় এন্ট্রান্স ডে পালন, এবার একটু ভিন্নভাবে। করনার ভয়াল থাবায় অসহায়,দুস্থ,চিকিৎসা প্রত্যাশী কিছু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে বুয়েট ১৮ ব্যাচ। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই ১৮ এর প্রতি ডিপার্টমেন্ট ও সেকশন এ শুরু হয় ফান্ড কালেকশন। এবং মাত্র ২ সপ্তাহেই ১,৫১,৯১৭ টাকা জমা হয়। এবং প্রাপ্ত টাকা-
ক) ইইই'১৮ এন্ট্রান্স ডের দিন ১০০ পরিবারকে (বুয়েটের গার্ড ভাইয়েরা,খালারাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন) চাল,ডাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে উপহার দেয়া হয়।
খ) ১৬ ব্যাচের এক ভাইয়ার ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে সহযোগিতা করা হয়।
গ) সেন্ট জোসেফের টিচার/১০ ব্যাচের এক ভাইকে সাধ্যমত দেওয়া হয়।
ঘ) ১৮ ব্যাচের মাঝে ৫জন কে সহযোগিতা করা হয়।
ঙ) জেনেসিস ফাউন্ডেশনে দেওয়া হয়।
চ) জাবি-র থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক ভাইয়াকে সাহায্য করা হয়।
ছ) স্বপ্ন সারথির প্রজেক্ট 'HEAL THE SOUL' যা রমজানে বিনামূল্যে দুস্থ মানুষদের ইফতার করায় – সেখানে দেয়া হয়।
জ) প্রজেক্ট পথচলা, যারা পথশিশুদের খাবার জোগায়, তাদের ডোনেট করা হয়।
ঝ) প্রজেক্ট হাসিমুখে ডোনেট করা হয়।
ঞ) কুয়েটের এক ভাই যার বাবার ক্যান্সার, উনাকে সহায়তা করা হয়।
ট) হিউমান লাভ ফাউন্ডেশন, যা রংপুর দিনাজপুরে চ্যারিটি বিতরন করে, সেখানে সাহায্য করা হয়।
ঠ) প্রজেক্ট রঙ তুলিতে ডোনেট করা হয়।
ড) সংযোগ : কানেক্টিং পিপল, তাদের যাকাত অনুদান কার্যক্রমে অনুদান দেওয়া হয়।
ঢ) ১৮ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর রেফারেন্সে তার এক ফ্রেন্ডের বাবার কিডনি ড্যামেজড, উনাকে সহায়তা করা হয়।
ণ) এক মাসির করোনায় পরিবার ভেঙে গিয়েছে, উনাকে সহায়তা করা হয়।
ত) মাস্তুল ফাউন্ডেশন, যা করোনার রোগীর কাফনের কাপড় কিনে দেয়, এছাড়াও চ্যারিটি কার্যক্রম চালায়, ওখানে ডোনেট করা হয়।
থ) বিদ্যানন্দ: এক টাকায় আহারে আগেরবারের মত এবারো ডোনেট করা হয়।
দ) করোনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ এক রিকশা চালক কে সাহায্য করা হয়েছে।
ধ) সি এসবি থেকে পাওয়া এক আপু ও করোনায় ধসে যাওয়া তার পরিবারকে সহায়তা করা হয়।
মহামারী তে যতটুকু পারা যায় অন্যদের মুখে হাসি ফুটানোর ক্ষুদ্র এই প্রয়াস। তাছাড়াও অনলাইনে সীমাবদ্ধতার কারনে ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক রম্য-বিতর্ক,গান,বিভিন্নরকম প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাদ যায় নি।তবে অনলাইন এ।
এখন প্রতিক্ষা শুধু একটি নির্মল সকালের, সুস্থ পৃথিবীর। মহামারী কাটিয়ে সুন্দর,সুস্থ,স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক সবার জীবনযাত্রা। প্রতিক্ষা নীড়ে ফেরার। কবে আবার মূখরিত হবে বুয়েটের ক্যাম্পাস সবার পদচারনায়। -আবার আসিবো ফিরে...
(ছবিটি ডিজাইন করেছেন - অর্ণব ও কাশফিয়া)
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!