আজ ১ লা এপ্রিল, ২০২৪ ইং তারিখে জাতীয় সংবাদ মাধ্যম 'সময় টিভি' এর প্রতিবেদনে বুয়েট সাংবাদিক সমিতি নিয়ে উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যাচার করা হয় যা সম্পুর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সময় টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের ব্যাপারে উসকানি মূলক রিপোর্ট প্রকাশ করে বুয়েট সাংবাদিক সমিতি। সময় টিভির উক্ত রিপোর্ট হলুদ সাংবাদিকতার এক নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।
প্রকৃতপক্ষে, ২৭ মার্চ দিবাগত রাতের ঘটনায় বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কমন প্লাটফর্ম 'Current Students of BUET' এ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও প্রমান স্বরূপ বিভিন্ন ছবি, ভিডিও প্রকাশ করা হয়। উক্ত ছবি, ভিডিও এবং বুয়েট গেইটের নিরাপত্তাকর্মীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লিখিত প্রতিবেদন ও ভিডিও প্রকাশ করে বুয়েট সাংবাদিক সমিতি। এক্ষেত্রে কোনোরকম উসকানিমূলক মিথ্যাচার নয়, বরং সত্যঘটনা এবং তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই বুয়েট সাংবাদিক সমিতি উক্ত রিপোর্টটি প্রকাশ করে। তাই এক্ষেত্রে উসাকনিমূলক গুজব ছড়ানোর অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যাচার এবং বুয়েট সাংবাদিক সমিতির সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।
'সত্যে, সাম্যে, একতায়' মূলমন্ত্র নিয়ে পরিচালিত বুয়েট সাংবাদিক সমিতি সর্বদাই বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বুয়েটের নিয়ম নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বুয়েটের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা নিরপেক্ষভাবে প্রচারে বুয়েট সাংবাদিক সমিতি বদ্ধপরিকর এবং ইতঃপূর্বে বুয়েটের নানা বিষয়ে সর্বপ্রথম যত্থার্থ সংবাদ করার মাধ্যমে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কন্ঠ হয়ে উঠার জন্য সারাদেশব্যাপী সমাদৃত হয়েছে।
বুয়েটের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতই বুয়েটে ছাত্র-শিবির, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্য ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের যেকোনো প্রকার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বুয়েট সাংবাদিক সমিতি সর্বদা সোচ্চার।বুয়েট ক্যাম্পাসের অন্যান্য ক্লাবগুলোর মতোই বুয়েট সাংবাদিক সমিতি একটি প্রশাসন-অনুমোদিত ক্লাব এবং বুয়েট সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব গঠন্তন্ত্র রয়েছে। এক্ষেত্রে বুয়েট সাংবাদিক সমিতির বৈধতা নিয়ে কোনোরূপ প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
এমতাবস্থায় বারবার বুয়েট সাংবাদিক সমিতিকে নানাভাবে মিথ্যা ট্যাগ লাগিয়ে অপদস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখ, রবিবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা থেকে সরকার বিরোধী নাশকতার অভিযোগে বুয়েটের বর্তমান ২৪ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয় এবং ছাত্র-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়। যাদের মধ্যে কয়েকজন বুয়েট সাংবাদিক সমিতির এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ছিলো বলে জানা যায়। উক্ত ঘটনাকে পুঁজি বানিয়ে বুয়েট সাংবাদিক সমিতিকে শিবির আখ্যা দেয়া হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য যে, ৩০ জুলাই ২০২৩ এর উক্ত ঘটনার পরই তাৎক্ষনিক ভাবে গত ১ লা আগস্ট ২০২৩ তারিখ, বুয়েট সাংবাদিক সমিতির এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিং এর দ্বারা সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্যদেরকে বুয়েট সাংবাদিক সমিতির কার্যক্রম থেকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
উক্ত ঘটনার সত্যতা-অসত্যতা যাচাই প্রক্রিয়াটি মহামান্য আদালতে বিচারাধীন, এমনকি, উক্ত বিষয়ে বুয়েটের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি আজ অবদি কোনো তদন্ত রিপোর্ট ও সিদ্ধান্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবহিত করেনি। ফলে, কোনো সুদৃঢ় ডকুমেন্টেড প্রমান ছাড়া ক্লাব কন্সটিটিউশন অনুযায়ী বুয়েট সাংবাদিক সমিতি কোনো কার্যকরী সদস্যের স্থায়ী বহিস্কারের অধিকার রাখে না। এব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষ যখনই তাদের পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদনে উক্ত কতিপয় সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করবে অথবা মহামান্য আদালত কর্তৃক তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হবে, বুয়েট সাংবাদিক সমিতি তাদের বিরূদ্ধে তৎক্ষণাৎ স্থায়ী বহিষ্কারের ব্যবস্থা নিবে।
এহেন অবস্থায় একটি জাতীয় টেলিভিশনে মিথ্যাচারের মাধ্যমে উদ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা এবং সর্বোপরি বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে কুরোচিত করার এমন প্রচেষ্টার প্রতি আমরা তীব্র নিন্দাজ্ঞ্যাপন করছি।
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!