#ScamAlert #avoid_dhakaresort বুয়েট কেমিক্যাল '১৮ ব্যাচের সম্মিলিত বিবৃতি -
" গত ১লা ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, তারিখে আমরা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত ঢাকা রিসোর্টে ডিপার্টমেন্টের পিকনিকে প্রায় ৩৫০ জন গিয়েছিলাম। তাদের সাথে আমাদের কন্ট্র্যাক্ট হয়েছিলো জনপ্রতি ১০০০ টাকায় তাদের পক্ষ থেকে সব সার্ভিস দেয়া হবে। এর মধ্যে পুরো ভেন্যু, সুইমিং, দুপুরের খাবার (বড় ১ পিস মাটন সহ কাচ্চি, কোয়ার্টার মুরগির ১ পিস রোস্ট, ফিরনি, ড্রিংক্স) ইনক্লুডেড ছিলো। দুপুরের খাবারে কথা অনুয়ায়ী বড় এক পিস মাটন সহ কাচ্চি, রোস্ট, ফিরনি, ড্রিংক্স তারা পরিবেশন করেন না। পুরো আয়োজনেই ছিলো বিভিন্ন ধরনের গুরুতর সমস্যা , যেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো:
১। শুরুর দিকে ১০০ গ্রাম অথবা তার কাছাকাছি সাইজের মাটন দেয়া হলেও কতক্ষণ পর থেকেই মাটনের সাইজ ছোট হওয়া শুরু করে। তাদেরকে বহুবার বলার পরেও তারা সঠিক সাইজের মাটন দিচ্ছিলেন না। তাছাড়া, মাংসের কোয়ালিটিও ছিলো খুবই নিম্নমানের। তাদের কিচেনে গিয়ে দেখা যায় তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে (৩৫০ জনের জন্য) মাটন রান্নাই করেন নাই। তাই ছোট ছোট টুকরা দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিলো। উপরন্তু কাচ্চিটা পুরোই বিস্বাদযুক্ত (শুধু বাসমতি চাল আর গোলমরিচের স্বাদযুক্ত) ছিলো, যা নিয়েই অসংখ্য স্টুডেন্ট কমপ্লেইন্ট জানায়। এক পর্যায়ে তারা পাতিলের নিচে লেগে থাকা পুড়ে কয়লার মতো হয়ে যাওয়া মাটন ও আলুর টুকরা সার্ভ করা শুরু করেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় নি কারণ এইগুলো বাদে মাটনের কোনো পিস বাকিই ছিলো না। এদিকে আমাদের প্রায় ২০০ জনের খাওয়া তখনো বাকি। উপায় না পেয়ে অনেকে এই পোড়া মাটনগুলোই খায়, অনেকে মাটন না পেয়ে শুধু রোস্ট দিয়ে কাজ চালায়। পরিবেশ সামাল দেয়ার জন্য তারা ফ্রিজ থেকে বের করে কিছু বাসী মাংসও সার্ভ করেন। এর কিছুক্ষণ পরে রোস্টও শেষ হয়ে যাওয়ায় খাবার পরিবেশন বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। আমাদের খাওয়া দাওয়া দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আমাদের জন্য অর্ধেকেরও বেশি খাবার সার্ভ করতে ব্যর্থ ম্যানেজার শেষের দিকে চুলায় নতুন করে ৫০ জনের মুরগি আর মাটন বসান, যা অখাদ্য ছিলো। আর এর আগেই আমাদের প্রায় ১০০ জনের মাটন ছাড়াই খাওয়া লাগে, যা উপরেও উল্লেখ করা হয়েছে। শেষমেষ যারা বাকি ছিলো, তারা বিকাল ৫টার দিকে খেতে বসে। নতুন করে রান্না করা মাটনের পুরোটাই ছিলো অত্যন্ত নিম্নমানের। রাবারের মতো শক্ত হওয়ায় এই মাংস চিবিয়ে খাওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভবপর হয়নি।
২। বেশিরভাগ রোস্টের সাইজই ছিলো অত্যন্ত ছোট। শেষের দিকে রোস্ট শেষ হয়ে গেলে এক পিস রোস্টকে দুই টুকরো করেও পরিবেশন করা হয়। এছাড়া, রোস্টগুলো স্বাদহীন এবং কিছু রোস্ট ফ্রিজ থেকে নামিয়ে গরম করে দেয়া হয়েছে বলেও অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ জানায়।
৩। আগেই মেয়াদোত্তীর্ন হয়েছে অথবা ১লা ফেব্রুয়ারি তারিখেই মেয়াদ শেষ হবে, এমন অসংখ্য ড্রিংক্স সার্ভ করা হয়।
৪। ফিরনিতে দুধ ও চিনির পরিমাণ নিতান্তই কম ছিলো। মনে হচ্ছিলো জাউ ভাতের মধ্য অল্প কিছু দুধ, চিনি যুক্ত করা হয়েছে।
৫। সালাদে শুধুমাত্র বাঁধাকপির পাতা সার্ভ করা হয়। একপর্যায়ে বলার পর কিছু শসা কেটে দেয়।
৬। আমাদের সাথে যাওয়া ড্রাইভাররা অভিযোগ জানায় তাদেরকে দেয়া খাবারও ছিলো বাসী।
৭। আমাদেরকে সাউন্ড প্রোভাইড করার কথা থাকলেও সাউন্ডের সাথে ছিলোনা কোনো জেনারেটর কানেকশন। এর ফলে যতক্ষণ কারেন্ট ছিলোনা, ততক্ষণ আমাদের স্টেযের প্রোগ্রামে কিছুই করা যায়নি।
৮।পুরো ৩৫০ মানুষের জন্য ওইখানে স্টাফ ছিলো মাত্র ৫-৬ জন। ম্যানেজারকে দুপুর থেকে কয়েকবার সমস্যার কথা বলা হলেও তিনি ব্যাপারটা গায়ে নেননি। "দিচ্ছে দিচ্ছে", "অপেক্ষা করুন" বলে আমাদেরকে উপরিউক্ত পুড়ে কয়লা হওয়া মাটনের পিস সার্ভ করতে থাকা হয়। আমরা মালিক পক্ষকে জানালে মালিক পক্ষ ব্যাপারটি অস্বীকার করেন এবং জানান "এরকম কিছু হওয়ার কথা না", "দেখে জানাচ্ছু কিছুক্ষণ পরে", ইত্যাদি৷ মালিক ব্যস্ত আছেন বলে এরপরে উনার পিএস এর নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বললে তারা পিএস বলেন যে রান্নায় ১৯-২০ হতে পারে, আমরা কম্পলেইন্ট দিলে তারা সামনে বেটার করার চেষ্টা করবেন। তারা জানান এখন আর এটায় কিছু করার নেই। আমাদের প্রোগ্রামের শিডিউল অনুযায়ী ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিলো বিভিন্ন গেমস আর কালচারাল প্রোগ্রাম। তাদের শেষ সার্ভ করা শুরু হয় বিকাল ৫টায় যা আমাদের পুরো প্রোগ্রামের পরিবেশটাকেই নষ্ট করে।
শেষ পর্যন্ত আমরা কিছু করতে না পেরে আমাদের প্রোগ্রামে উপস্থিত আমাদের ডিপার্টমেন্টের হেড স্যারের শরণাপন্ন হই। স্যার থানায় কল করে ওসির সাথে কথা বলার পরে তারা ২ জন কর্মকর্তাকে পাঠান এবং সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ উনাদের সাথে আমরা মিটিং-এ বসি। কিন্ত উনারা কোনো ভাবেই স্বীকার করতে রাজি হন না যে তারা পুরো প্রোগ্রামের পরিবেশ নস্ট করেছেন, খাবার শর্ট পড়েছে, এবং অখাদ্য জিনিস রান্না করে পরিবেশন করা হয়েছে। এমনকি মালিক, ম্যানেজারও পুরো ব্যাপারটি অস্বীকার করেন। উপয়ান্তর না দেখে আমাদের হেড স্যার উপর মহলে যোগাযোগ করেন এবং শেষ পর্যম্ত তারা জনপ্রতি মাত্র ১০০ টাকা ছাড় দিতে রাজি হন, যেটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত ছিলো না। এমন অবস্থায় আমাদের হেড স্যারের পরামর্শে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা আর কথা না বাড়িয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করে উক্ত স্থান ত্যাগ করি। কিন্তু পুরো সময় জুড়েই কর্তৃপক্ষের আচরণ অত্যন্ত রূঢ় ও শিষ্টাচার বহির্ভূত ছিলো। তাদেরকে বারবার রিকোয়েস্ট করার পরেও তারা মানসম্মত খাবার পরিবেশন করেননি এবং শেষমেষ তারা তাদের এই অপরাধের জন্য পর্যাপ্ত ছাড় দিতেও রাজি হননি।এরকম আমাদের একদিন সময় এবং প্রোগ্রাম নস্ট করার জন্য একমাত্র তারাই দায়ী এবং তারা তা অস্বীকার করে।
এমন অপেশাদার, অভদ্র ও জোচ্চর লোক দিয়ে ভর্তি ঢাকা রিসোর্টে না যাওয়ার জন্য বুয়েটিয়ান কমিউনিটি সহ দেশের সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে। "
প্রচারক্রমে - বুয়েট সাংবাদিক সমিতি
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!