ছাত্ররাজনীতির কলঙ্কজনক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর, ২০১৯ আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের ভয়ংকরতম অধ্যায়ের সাক্ষী হয় বুয়েট। এরপরই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় উপাচার্যের ক্ষমতাবলে বুয়েটে সকল প্রকার সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কোন নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠন নয় বরং সকল ধরনের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনই এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।
গত ১৩ জুলাই, ২০২৩ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয় যেখানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন বর্তমান শিক্ষার্থী '২১ ব্যাচের ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি (২১০৪১৪১) ও '১৭ ব্যাচের হাসিন আজফার পান্থ (১৭০৬১৭৭) -কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; যা সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে। সামগ্রিকভাবে এই ঘটনায় পুনরায় ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি আবির্ভাবের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদ্বয়ের প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং এটিকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, শৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্যে হুমকি হিসেবে মনে করছে। তদুপরি পদধারী শিক্ষার্থীদ্বয় অন্যান্যদেরকেও ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি ও হাসিন আজফার পান্থকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ভঙ্গ এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগে ডিসিপ্লিনারি কমিটি কর্তৃক তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এহেন কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো শিক্ষার্থী যেনো ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
২০০২ সালের সনি হত্যাকাণ্ড এবং তৎপরবর্তীতে র্যাগিং, ছাত্র নির্যাতন, ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টিসহ নানাবিধ অপকর্মের ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা রেখেছিল লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের এরূপ ভয়াবহ অপতৎপরতার অবসান ঘটে ২০১৯ সালে আবরার হত্যাকাণ্ড পরবর্তী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দু’জন বুয়েটিয়ানের পদলাভ আবারো ক্যাম্পাসে রাজনীতি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে আমরা মনে করি।
আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা যেকোনো রকম লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতার বিরুদ্ধে এবং সর্বাবস্থায় এই আপসহীন অবস্থান বজায় রাখতে সংকল্পবদ্ধ। এসবের সাথে কারো দূরতম সংশ্লিষ্টতাও কখনো মেনে নেওয়া হবেনা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ
তথ্যসূত্র: Interval 18
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!