লকডাউনে শতশত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে সম্প্রতি লাইমলাইটে এসেছে 'হেল্প বুয়েটিয়ান' নামক একটি সেচ্ছাসেবী দল। সর্বশেষ গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ এরপর খিলগাঁও রেললাইন বস্তি, শাহজাহানপুর কবরস্থান ও শাপলাচত্বরে ৩০০ জন মানুষের দুপুরের আহারের ব্যবস্থা করে তারা।
এই বছর রোজার মাসে দখলদার ঈসরায়েলের আক্রমণে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ব্যাচের কয়েকজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি গ্রুপ খুলেছিলেন পুরকৌশল ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী আমির ফয়সাল। এই গ্রুপের নাম দেয়া হয় 'হেল্প বুয়েটিয়ান'। হেল্প বুয়েটিয়ানের মাধ্যমে বুয়েটের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে প্রায় ৪লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা (৪,৬৭৪ ইউরো) অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পাঠানো হয়। পাঠিয়ে দেয়া শেষেই গ্রুপের কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুরু হয় উত্তরবঙ্গে নদী ভাঙ্গন ও বন্যা! গ্রুপের সবাই সিদ্ধান্ত নেয় আগের পদ্ধতিতে টাকা তুলে সাহায্য পাঠানো হবে উত্তরবঙ্গের ভিটেহারা ও বন্যায় অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের। মানবতার তাগিদে এবার দুর্যোগ আক্রান্ত ১৬০টির বেশি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয় চাল, তেল, ডাল, লবণ। এভাবেই যাত্রা শুরু হয় বুয়েটের বর্তমান কিছু শিক্ষার্থীর হাতে গড়ে ওঠা 'হেল্প বুয়েটিয়ান' এর গল্প।
গত ঈদের পর থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে আর্থিক সমস্যায় পরে ঢাকা শহরে বসবাসরত বিভিন্ন ভাসমান পরিবার, দিনমজুর, রিকশাচালক, ফুটপাতের খুচরা ব্যবসায়ী ইত্যাদি। তাদের জন্য এক বেলা আহারের ব্যবস্থা করতে 'হেল্প বুয়েটিয়ান' চালিয়েছে ভাত প্রজেক্ট। পুরো লকডাউন ব্যাপী নিয়মিত ফান্ড রেইজ করে মতিঝিল, শহীদ মিনার, বায়তুল মুকাররাম, শাপলা চত্বর, খিলগাঁও ইত্যাদি এলাকায় প্রতিবেলা প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে খাওানোর ব্যবস্থা করা হয়।
করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুহার যখন ঊর্ধ্বমুখী, এমন সময়ে মানবতার টানে প্রতিদিন অসহায় মানুষদের একবেলা খাওয়ানোর জন্য ছুটে বেড়ানোয় ব্যপক প্রশংসা কুড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী দলটি।
'হেল্প বুয়েটিয়ান' এর সিনিয়র সদস্য আমির ফয়সাল জানান, লকডাউনে না খেয়ে থাকা মানুষদের জন্য নিজেদের সামর্থ্য থেকে কিছু করতে পারা উচিত, এই মানসিকতা থেকেই এই উদ্যোগটি নেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই বুয়েট কেন্দ্রিক এরকম কোনো দল থাকুক যারা হেল্প রিলেটেড যেকোন কাজে এগিয়ে আসবে। যেমন হতে পারে বুয়েটের কোনো ছাত্রের সাহায্য দরকার হচ্ছে বা দেশের কোনো অঞ্চলে দুর্যোগে সাহায্য পৌঁছানো। কোনো ছাত্রের আর্থিক অসঙ্গতি থাকলেও তার যেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে অসুবিধা না হয় এরকম বিভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা আছে।"
ভবিষ্যতে 'হেল্প বুয়েটিয়ান'কে একটি গাঠনিক রূপ দিয়ে একে একটি সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলে এর কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করার আশাও তিনি ব্যক্ত করেন। মানবতার খাতিরে 'হেল্প বুয়েটিয়ান' – দলটিকে তাদের বিভিন্ন প্রজেক্টে সাহায্য করতে চাইলে তাদের পেইজে যোগাযোগ করতে পারেন।
পেইজ লিংক - https://www.facebook.com/HelpBUETian
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!