Information Center on Nuclear Energy, Dhaka" এবং "Public Information Center on Nuclear, Ishwardi" কর্তৃক আয়োজিত কেস কম্পিটিশন Online Nuclear Dilemma তে প্রথম রানার আপ হয়েছে বুয়েটের টিম Schrödinger's cats। টিম মেম্বাররা হলেন খান তাহমিদ হাসান সাফিন, তাসমিয়াহ্ আফরিন, তানজিমা তাবাসসুম শশী এবং অংকন দেব। তারা সবাই বুয়েটের ১৮ ব্যাচের এবং তড়িৎও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত।
Online Nuclear Dilemma একটি কেস কম্পিটিশন যেটি মূলত প্রতিবছর হয়ে থাকে। কেসগুলো মূলত একটু নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে বাস্তবে যে-ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে অংশগ্রহণ করে। নিউক্লিয়ার এনার্জি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ভিত্তিতে এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের দুইটা রাউন্ড অতিক্রম করতে হয়। প্রথম রাউন্ডে একটি Dilemma এর পরিপ্রেক্ষিতে মতামত দিতে হয়। এক্ষেত্রে প্রতি টিমকে একটি Role বরাদ্দ করে দেয়া হয় এবং তারা সেই Role এর ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। এবার প্রথম রাউন্ডে প্রায় ৪৫ টি টিম অংশগ্রহণ করে এবং সেখানের থেকে ৪ টি টিম ফাইনাল রাউন্ডে যায়। প্রথম রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয় ১৬ জুলাই। ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয় ৩০ জুলাই। সেখানে আরেকটি Dilemma Solve করতে হয়। ফাইনাল রাউন্ডটি পুরোপুরি Live হয় এবং জাজদের সামনে বক্তব্য স্থাপন করতে হয়। সেখান থেকে বুয়েটের টিম Schrödinger's cats প্রথম রানার আপ হয় এবং মাত্র ০.৫ নাম্বারের ব্যবধানে টিম ইউরেনিয়াম বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগীতায় কিভাবে এগিয়েছেন এবং তাদের প্রজেক্টটি ভবিষ্যতে কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে খান তাহমিদ হাসান সাফিন বলেন “সত্যি কথা বলতে,আরো বেশ কয়েকটা কেস কম্পিটিশনেই অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছে।বিভিনন্ন জায়গায় পুরস্কারও পেয়েছি। কিন্তু এবার একটু ভিন্ন ধরনের কেস কম্পিটিশন করতে চেয়েছিলাম। তাই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। কেসগুলো সলভ করতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয় শিখতে হয়েছে,বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। একটা নিউক্লিয়ার রিয়াক্টর কীভাবে কাজ করে, সেটার গঠন কী,কী কী ধরনের কাজে সেটি লাগে এ ধরনের বিষয়ে ধারণা নিতে হয়েছে। এছাড়া একটি নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে কীভাবে মানুষ কাজ করে এবং সেই এলাকার উপর তার প্রভাব কী থাকে, সেটিও আইডিয়া নিতে হয়েছে। সামনে এই Learning গুলো আমাদের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন ধাপে কাজে লাগবে এবং এসব বিষয়ের উপর কাজ করে আমরা বিভিন্ন প্রজেক্টেও কাজ করতে পারি, সেটা বাংলাদেশের নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য অপরিহার্য। তাসমিয়াহ্, অংকন আর শশীর সাথে কাজ করাটাও এইক্ষেত্রে অনেক হেল্পফুল ছিল।“
আরেক টিম মেম্বার অংকন দেব তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন,” প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নতুন অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। এর পূর্বে অনেক ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেও এটা অনেকটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা ছিল। ১০ ঘন্টার মধ্যে আমাদের সলিউশন সাবমিট করতে হয়েছে। টানা ৭-৮ ঘন্টা টিমের সাথে কাজ করে খুবই ভাল লেগেছে। অনেকটা উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে ৪৫ টার উপরে টীম থেকে আমারা সেরা ৪ এ ছিলাম। আমাদের ফাইনাল রাউন্ডেও আমরা অনেকটাই ভাল করেছি। সাথে ৩ জন দক্ষ টীম মেট থাকায় এত দূর আসতে পেরেছি। যদিও আমরা প্রথম হতে পারি নাই, তারপরও সব মিলেয়ে খারাপ হয়নি। ০.৫ এর জন্য হেরে যাওয়া অনেকটা কষ্টদায়ক ছিল। তবে আমরা বিচারক যারা ছিলেন তাদের বিবেচনাকে সম্মান করি। যাইহোক, পরবর্তি সময়ে আরো ভালও করার আশা করি, আমাদের জন্য দোয়া করবেন। বিজয়ীদের জন্য শুভকামনা থাকল।
"এটি আমার জীবনের সেকেন্ড কেজ কম্পিটিশন,এর আগে আমি এই ধরনের কম্পিটিশন গুলোতে খুব একটা অংশগ্রহণ করিনি।আর টার্মের শেষ দুই সপ্তাহের একাডেমিক প্রেশারের মধ্যে দুইটি রাউন্ডেই আট ঘন্টার মধ্যে কেস সলভ করে সাবমিট করাটা বেশ কঠিন ছিল। ফাইনাল রাউন্ডে কেস সাবমিট করার পরপরই প্রেজেন্টেশন দেয়াটা একটি নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। তবে এই পুরোটা সময় আমার টিম মেম্বার্স অংকন, সাফিন এবং শশী অনেক বেশি কোওপারেটিভ ছিল।ওরা না থাকলে এতোদূর হয়তোবা আসতে পারতাম না। অনেক নতুন কিছু শিখেছি এই কম্পিটিশনের মধ্য দিয়ে।মাত্র ০.৫ মার্ক্সের ব্যবধানে আমরা প্রথম হতে পারিনি,কিন্তু এরপর থেকে চেষ্টা থাকবে যে আমাদের এই সামান্য ভুলত্রুটি গুলো শুধরে নিয়ে যেন সামনে আগাতে পারি“, বলছিলেন তাসমিয়াহ্ আফরিন। তানজিমা তাবাসসুম শশী তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ”এই কম্পিটিশন টি আমার জন্য অনেক ভালো একটি অভিজ্ঞতা ছিল। এখানে দুইটি রাউন্ডে যে কেস গুলা দেয়া হয়েছিল তা বেশ চ্যালেঞ্জিং এবং একই সাথে বেশ ইনোভেটিভ ছিল.আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আশা করি সামনে এগুলা কাজে লাগাতে পারব।”
টিম Schrödinger's cats এর জন্য রইল নিরন্তর শুভকামনা।
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!