"সত্যে, সাম্যে, একতায়"

কোপা আমেরিকা ২০২১ ও ইউরো ২০২০






২ বছর পর আবারও সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য চলে এলো গ্রীষ্মকালীন ফুটবল টুর্নামেন্ট। এবং সেটা একটা নয়, দুইটি ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ মাসজুড়ে বুঁদ হয়ে থাকবে সারা বিশ্বের ফুটবল ভক্তরা। ১১ তারিখ ইতালি-তুরষ্ক এর ম্যাচ দিয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ইউরোপীয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই উয়েফা ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বা ইউরো কাপ। আর আজ ১৩ তারিখ ব্রাজিল-ভেনেজুয়েলার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠেছে সাউথ আমেরিকান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই কনমেবল আয়োজিত কোপা আমেরিকা ২০২১।


বিশ্বজুড়ে মহামারীর থাবা থেকে মুক্তি পায়নি ফুটবলও। ইউরোপে করোনা ভাইরাসের আউটব্রেকের পর ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় জুন-জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ছিলো প্রায় সব দেশের ডোমেস্টিক লীগসহ উয়েফা আয়োজিত সকল টুর্নামেন্ট। এই বছরের ইউরো ও কোপা আমেরিকা দুটি টুর্নামেন্টই অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বনির্ধারিত সময় ছিলো ২০২০ সালের ১২ জুন থেকে ১২ জুলাই। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে দুটি টুর্নামেন্টই পেছাতে বাধ্য হয় উয়েফা ও কনমেবল। উয়েফা ইউরো ২০২০ নামেই ২০২১ সালের গ্রীষ্ম মৌসুমে টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও কনমেবল সিদ্ধ্বান্ত নেয় কোপা আমেরিকা ২০২১ নামেই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করার।


গত ১১ জুন থেকে শুরু হওয়া ইউরো ২০২০ আগের কয়েকটি টুর্নামেন্ট থেকে ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে। করোনা আউটব্রেকের আগেই কিছু পরিবর্তন আসার আভাস পাওয়া গিয়েছিলো। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো টুর্নামেন্টটির প্রচলনের ৬০ বছর উপলক্ষ্যে টুর্নামেন্টটি এই প্রথম কোন নির্দিষ্ট দেশে আয়োজনের পরিবর্তে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে ১১ টি দেশের ১১ টি শহরে। ২০১২ ইউরোর ফাইনালের আগেরদিন তৎকালীন উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন টুর্নামেন্টটি কোন নির্দিষ্ট দেশে আয়োজন না করে আলাদা আলাদা কয়েকটি শহরে আয়োজন করার।


২০১৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর উয়েফা প্রাথমিকভাবে ১৩ টি ভেন্যু সিলেক্ট করে। ব্রাসেলসের ইউরোস্টেডিয়ামের কনস্ট্রাকশনের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ায় ব্রাসেলসকে আয়োজক তালিকা থেকে বাদ দেয় উয়েফা। পরবর্তীতে এ বছরের ২৩ এপ্রিল দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হওয়ার আশঙ্কায় ডাবলিনের আভিভা স্টেডিয়ামকেও আয়োজক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া একই কারণে স্পেনের হোস্ট স্টেডিয়াম হিসেবে বিলবাও এর সান মেমেসের এর পরিবর্তে সেভিয়ার লা কার্তুজা স্টেডিয়ামকে সিলেক্ট করা হয়। শেষ পর্যন্ত যে ১১ টি শহরের ১১ টি স্টেডিয়ামে ইউরো ২০২০ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেগুলো হলোঃ


অলিম্পিক স্টেডিয়াম, বাকু, আজারবাইজান (গ্রুপ পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনাল) পার্কেন স্টেডিয়াম, কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম, লন্ডন, ইংল্যান্ড (সেমিফাইনাল, ফাইনাল, গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা, মিউনিখ, জার্মানি (গ্রুপ পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনাল) পুসকাস অ্যারেনা, বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরি (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) স্টাডিও অলিম্পিকো, রোম, ইতালি (গ্রুপ পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনাল) ইয়োহান ক্রুইফ অ্যারেনা, আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) অ্যারেনা ন্যাশনালা, বুখারেস্ট, রোমানিয়া (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) ক্রেস্টোভস্কি স্টেডিয়াম, সেইন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া (গ্রুপ পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনাল) হাম্পডেন পার্ক, গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন) লা কার্তুজা, সেভিল, স্পেন (গ্রুপ পর্ব ও রাউন্ড অফ সিক্সটিন)


২০১৮-১৯ উয়েফা ন্যাশনস লীগ, কোয়ালিফায়ার ও প্লে অফ খেলে উয়েফার অধীনে থাকা ৫৫ টি দেশের মধ্যে ২৪ টি দেশ শেষ পর্যন্ত ইউরো ২০২০ তে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। ২৪ টি দেশ ৬ টি গ্রুপে ভাগ হয়ে গ্রুপ পর্বের খেলা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ৬ টি গ্রুপের ৬ টি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, ৬ টি গ্রুপ রানার্সআপ ও সেরা ৪ টি ৩য় স্থান অধিকারী দল রাউন্ড অফ সিক্সটিনে খেলার সুযোগ পাবে।


করোনার কারণে উয়েফা কিছু নতুন নিয়ম প্রণয়ন করেছে। প্রতিটি টিমের কোচের হাতে থাকবে ৫ জন প্লেয়ারকে সাবস্টিটিউট করার অপশন, এর সাথে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে সেখানে থাকবে আরো একটি অপশন। এছাড়া সাধারণত যেকোন টুর্নামেন্টের স্কোয়াডে খেলোয়াড় সংখ্যা ২৩ হলেও উয়েফা এবার করোনার কারণে সর্বোচ্চ ২৬ জন খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখার সুযোগ দিয়েছে। এছাড়া এবারের ইউরোতেই সর্বপ্রথম ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারি এর প্রয়োগ দেখা যাবে। এছাড়া করোনার কারণে বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনা ছাড়া বাকি সব স্টেডিয়ামই ধারণক্ষমতার কম দর্শক নিয়ে ম্যাচ আয়োজন করবে।


এবার জেনে নেওয়া যাক এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী টিমগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে।


গ্রুপ এঃ ইতালি, সুইজারল্যান্ড, তুরষ্ক, ওয়েলস


এই গ্রুপের সবচেয়ে সম্ভাব্য ফল হলো আজ্জুরিদের আধিপত্য, যার আভাস আজ্জুরিরা ইতোমধ্যে তুরষ্ককে ৩-০ গোলে হারিয়ে কিছুটা দিয়েছে। তবে বাকি দুই স্থানের জন্য তুরষ্ক, সুইজারল্যান্ড ও ওয়েলসের মধ্যে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই গ্রুপে চারটি টিমেরই ডিফেন্স ভালো। ইতালির অভিজ্ঞ কিয়েলিনি,বনুচ্চি,আসেরবি,ফ্লোরেঞ্জিদের সাথে তরুণ বাস্তোনি, স্পিনাজ্জোলাদের নিয়ে গড়া ডিফেন্স সর্বশেষ গোল কনসিড করেছিলো ১৪ অক্টোবর নেশনস লীগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। সুইজারল্যান্ড ইতালির মতো স্ট্রং না হলেও গত ৬ মাসে মাত্র ৭ টি ম্যাচে একটির বেশি গোল হজম করেছে। তুরষ্কের তিন সেন্টারব্যাক সয়ঞ্চু, কাবাক ও ডেমিরাল বর্তমানে তরুণ সেন্টারব্যাকদের মধ্যে বেশ আলোচিত, এই ডিফেন্সলাইন সর্বশেষ ৫ ম্যাচে মাত্র ৪ গোল হজম করেছে, যেগুলোর মধ্যে ৩ টি ছিলো ক্লীনশীট। ওয়েলসও তাদের এই বছরের ৫ টি ম্যাচের তিনটিতেই ক্লীনশীট রাখতে সক্ষম হয়েছে।


সুতরাং বলা যায় এই গ্রুপে ঐ দলই ডমিনেট করবে যাদের ফরোয়ার্ডরা বিপক্ষের শক্তিশালী ডিফেন্স ভেদ করতে পারবে। ইতালির আক্রমণভাগ অন্য টপ দলগুলোর তুলনায় খুব একটা শক্তিশালী না হলেও তাদের ফ্রন্ট থ্রি এর ইনসিনিয়ে, ইম্মোবিলে, বেরার্ডিরা সিরি’আর এই সিজনের সর্বোচ্চ গোলস্কোরারদের তালিকায় টপ টেনেই আছে। তুরষ্ক ও ওয়েলস সেখানে নির্ভর করবে যথাক্রমে বুরাক ইলমাজ ও গ্যারেথ বেলের উপর। গ্যারেথ বেল যদি ইউরো ২০১৬ এর ফর্ম বজায় রাখতে পারে, তাহলে ওয়েলস সমর্থকরা আশা দেখতেই পারে।


তিনটি টিমের মিডফিল্ডের দিক দিয়ে ভেরাত্তি, জর্জিনহো, লোকাতেল্লিদের নিয়ে গড়া মিড নিয়ে ইতালি গ্রুপের বাকি দলগুলোর তুলনায় যোজন যোজন এগিয়ে থাকবে। সাম্প্রতিক ফর্ম ও স্কোয়াড বিবেচনায় ইতালিই তাই সম্ভাব্য গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এমনকি ইউরো জেতার জন্য ফেভারিট টিমও।



গ্রুপ বিঃ বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া


এই গ্রুপে পরিষ্কার ফেভারিট ফিফা র‍্যাংকিং এ ১ এ থাকা বেলজিয়াম। বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের বলতে গেলে এটাই শেষ সুযোগ ইন্টারন্যাশনাল ট্রফি জেতার। সব পজিশনেই আছে ভরসা করার মতো প্লেয়ার।


গোলকিপার কোর্তোয়া একতি অসাধারণ সিজন পার করেছেন রিয়ালের হয়ে ব্যক্তিগত পারফর্ম্যান্সের দিক দিয়ে। ডিফেন্সে আছেন অভিজ্ঞ অল্ডারউইর্ল্ড, ভার্টোঙ্ঘেন, ভারমেলেন, ডেনায়েররা। মিডফিল্ডে ইঞ্জুরি আক্রান্ত কেভিন ডি ব্রুইনাকে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মিস করেছে বেলজিয়াম। যদিও লুকাকুর জোড়া গোলে তার অভাব বুঝতে হয়নি বেলজিয়ামকে। বেলজিয়ামের গোল স্কোরিং এর জন্য সবচেয়ে ভরসার প্রতীক এই লুকাকু। মিডফিল্ড ও উইং থেকে তাকে সহায়তার জন্য কেডিবি ছাড়াও থাকবেন থরগান হ্যাজার্ড, কারাসকো, এডেন হ্যাজার্ড, দ্রিস মার্তেন্সরা।


এই গ্রুপের অন্য প্রথম ম্যাচডেতে অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো এবার প্রথম ইউরো খেলতে আসা ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্ক। এই গ্রুপে বেলজিয়ামের পর অন্য দলগুলো থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে ডেনমার্ক। গোলপোস্টের সামনে ক্যাসপার স্মাইকেল, ডিফেন্সে ক্যাপ্টেন সাইমন কাএরের সাথে আছেন আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেন। মিডফিল্ডে পিয়েরে এমিল হয়বিয়ার সাথে থাকার কথা ডেনিশদের প্রাণভোমরা ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। সব মিলিয়ে ডেনমার্কেরই এই গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে কোয়ালিফাই করার বেস্ট চান্স ছিলো।


এখানে অতীতকাল ব্যবহারের কারণ একটাই। গতকাল ডেনমার্ক-ফিনল্যান্ড ম্যাচে ঘটে যাওয়া এক বেদনাময় ঘটনা। ম্যাচের ৪২ মিনিটের সময় হঠাৎ করেই মাঠে পড়ে যান ডেনমার্কের সবচেয়ে বড় তারকা এরিকসেন। সাথে সাথে বন্ধ করে দেওয়া হয় ম্যাচ। তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নেওয়া হয় এরিকসেনকে। ম্যাচটি সাসপেন্ড করে দিয়েছিলো উয়েফা। দুশ্চিন্তায় ডুবে যায় সারা বিশ্বের সকল ফুটবল ফ্যানরা। ঐ সময় এরিকসেনকে ঘিরে রাখা ডেনিশ প্লেয়ারদের মুখমণ্ডলই জানান দিচ্ছিলো কতোটা গুরুতর এই এরিকসেনের পড়ে যাওয়া। পরবর্তীতে জানা যায়, এরিকসেন ঐ সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে এরিকসেন চেতনা ফিরে পেলে এবং তার স্ট্যাবিলিটি নিশ্চিত হওয়ার পর ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড আবার খেলতে নামে। ডেনমার্কের খেলোয়াড়রা মাঠে নামার সময় বিপক্ষের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পান অভিবাদন। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ডেনমার্ক ১-০ গোলে হেরে যায়। ফিনল্যান্ড মেজর কোন টুর্নামেন্টে তাদের প্রথম গোল দিয়েও উদযাপন করা থেকে বিরত থাকেন। এই ম্যাচটি অবশ্য মাঠের ঘটনার কারণে ছাড়িয়ে গেছে জয়-পরাজয়কেও।


গ্রুপ সিঃ অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, নর্থ মেসিডোনিয়া, ইউক্রেন


এই গ্রুপেও গ্রুপ ‘এ’ এর মতো ডাচ আধিপত্যের সাথে বাকি তিনটি দলের মধ্যে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে ওঠার প্রতিযোগিতা আশা করা যায়। ইউরোপে প্রতিভাবান ফুটবলারদের আঁতুড়ঘরখ্যাত নেদারল্যান্ডস দল রোবেন-ভ্যান পার্সি-স্নেইডারদের সোনালি প্রজন্মের প্রস্থানের পর একটা খুবই বাজে সময় অতিক্রম করে। ব্যর্থ হয় ২০১৬ ইউরো ও ২০১৮ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে।


কিন্তু এক ঝাঁক তরুণ ফুটবলারের উত্থান ও কোম্যানের নেতৃত্বে ডাচ টিমটি পুনরায় ইউরোপে ডমিনেট করার আভাস দেয় ২০১৮-১৯ নেশনস লীগের ফাইনালে ওঠার মাধ্যমে। কিন্তু কোম্যান বার্সায় যাওয়ার পর ফ্রাঙ্ক ডি বোর ডাগআউটে আসলে নেদারল্যান্ডসের ফর্ম একটু হলেও ড্রপ করেছে। ২০২১ সালে নেদারল্যান্ডস ৩ টি ম্যাচ জিতলেও জয়গুলো ছিলো লাটভিয়া, জর্জিয়া ও জিব্রাল্টারের সাথে। ইউরোর আগেই হেরছিলো তুরষ্কের বিপক্ষে।


কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম খুব একটা আশা জাগানিয়া না হলেও স্কোয়াড বিবেচনায় ইউরোপের অন্যতম সেরা দল এবং সন্ধাতীতভাবেই গ্রুপের বেস্ট টিম নেদারল্যান্ডস। ডিফেন্সের মেইনম্যান ভ্যান ডাইকের অনুপস্থিতি খুব একটা অনুভব করতে দিবেন না ম্যাথিয়াস ডি লিট ও স্টিফেন ডি ভ্রাই। মিডফিল্ডে অভিজ্ঞ ডি রুন ও জর্জিনিও ওয়াইনাল্ডামের সাথে আছেন এই সিজনে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ফ্র্যাঙ্কি ও তরুণ প্রতিভাবান রায়ান গ্র্যাভেনবার্খ। এটাক লীড করার দায়িত্ব থাকবে একটি অসাধারণ মৌসুম কাটানো মেম্ফিস ডিপেই এর উপর।


‘সি’ গ্রুপের বাকি তিনটি দলের মধ্যে অস্ট্রিয়া ও ইউক্রনের গত ইউরোর রেকর্ড খুব একটা আশা জাগায় না। তবে দুটি দলেরই সামর্থ্য আছে সর্বশেষ ৪ ম্যাচে আনবিটেন ও প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে আসা নর্থ মেসিডোনিয়ার সাথে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে ওঠার জন্য লড়াই করার।


গ্রুপ ডিঃ ক্রোয়েশিয়া, ইংল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, স্কটল্যান্ড


গ্রুপ ডির প্রথম ম্যাচডেই সম্ভবত হতে যাচ্ছে এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও ৩য় স্থান অধিকারী দল নির্ধারণকারী ম্যাচডে। কারণ এই গ্রুপের প্রথম ম্যাচডে তেই মুখোমুখি হবে ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়া দুই দল ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। এই দুই দলই এই গ্রুপের টপ ফেভারিট। কোন অঘটন না ঘটলে হয়তো এই ম্যাচের জয়ী দলই রাউন্ড অফ সিক্সটিনে কোয়ালিফাই করবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসবে। আর ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কোন অঘটন না ঘটাতে পারলে অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হওয়া স্কটল্যান্ড-চেক রিপাবলিক ম্যাচের পরাজিত দলের টপ ফোর ৩য় স্থান অধিকারী দলের লড়াই থেকে বাদ পড়াও অবশ্যম্ভাবী।


ইংল্যান্ড দলটি গঠিত হয়েছে এক ঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান প্লেয়ারের সমন্বয়ে। সর্বশেষ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলায় তাদের নিয়ে আশাটাও বেশি। প্রত্যেক পজিশনেই বলতে গেলে আছে ইন ফর্ম প্লেয়ার। এজন্য অনেকেই ইংল্যান্ড দলটাকে ফেভারিটদের কাতারেই রাখছেন। তবে ইউরোতে ইংল্যান্ডের এই ইউরোতে দৌড় কতোটুকু হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করবে কোচ গ্যারেথ সাউথগেট কিভাবে এই তরুণ প্লেয়ারদের নিয়ে একটা ভালো কম্বিনেশন ক্রিয়েট করতে পারেন।


২০১৮ বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া টিমের ঐ টুর্নামেন্টের বেশ কয়েকজন টপ পারফর্মারই নাই এবারের ইউরোতে। ডিফেন্সে দোমাগয় ভিদা, মিডফিল্ডে লুকা মডরিচ ও এটাকে ইভান পেরিসিচ, আন্তে রেবিচদের মতো অভিজ্ঞদের সাথে আছে একঝাঁক তরুণ ফুটবলার। এই টুর্নামেন্টে তাই ক্রোয়েশিয়াদের সাফল্যও নির্ভর করবে এই অভিজ্ঞ প্লেয়ারদেরই উপর।


গ্রুপের অপর দুই দল স্কটল্যান্ড বা চেক রিপাবলিকের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। এই দুই টিমের লড়াই হবে ৩য় স্থানের জন্য। স্কটল্যান্ড ১৯৯৬ ইউরোর পর প্রথম ইউরোতে অংশগ্রহণ করছে, আছে ম্যাকটমিনাই, টিয়েরনি, আর্মস্ট্রং, রবার্টসন, চে অ্যাডামসদের মতো প্রিমিয়ার লীগে নিয়মিত খেলা ফুটবলার। স্কটল্যান্ডের এই টিম হাইপ্রেসিং এ খেলা চেক রিপাবলিকের সাথে ভালোই প্রতিযোগিতা দিতে পারবে আশা করা যায়।


গ্রুপ ইঃ স্পেন, সুইডেন, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া


এই গ্রুপে স্বাভাবিকভাবেই পরিষ্কার ফেভারিট স্পেন। যদিও স্পেনের ২০০৮-২০১২ সেই সোনালি প্রজন্মের টিমের মাত্র ২ জনই আছেন এই টিমে- জর্ডি আলবা ও সার্জিও বুসকেটস। এদের মধ্যে বুসকেটস কয়দিন আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ছিটকে গেছেন টুর্নামেন্ট থেকে। তাই ক্যাপ্টেন আলবা বাদে দলে অভিজ্ঞ প্লেয়ার আছেন আজপিলিকুয়েতা, থিয়াগো আলকান্তারা, ডেভিড ডি গেয়া ও কোকে। স্পেনের তিনটি বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে স্ট্রং বলা যায় কোকে, ফাবিয়ান রুইজ, মার্কোস লরেন্তে, পেদ্রি, থিয়াগো, রদ্রিদের নিয়ে গড়া মিডফিল্ড। ডিফেন্সে রামোস, নাচোদের মতো অভিজ্ঞ প্লেয়ারদের না নিয়ে লাপোর্তে, এরিক গার্সিয়া, লরেন্তের মতো তরুণ অনভিজ্ঞ প্লেয়ারদের নিয়ে দল গড়ায় ইতোমধ্যে অনেক সমালোচনার শিকার হয়েছেন কোচ লুইস এনরিকে। দেখা যাক, তরুণ ডিফেন্ডাররা এনরিকের আস্থার প্রতিদান কতোটা দিতে পারেন।


স্পেনের সবচেয়ে দুর্বল দিক বলা যায় এটাক, বিশেষ করে গোল স্কোরিং। চান্স ক্রিয়েশনের জন্য ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডারদের পাশাপাশি আছেন অলমো, ফেরান তোরেস, মিকেল ওয়ারজাবালের মতো উইঙ্গাররা। কিন্তু চান্সগুলো কনভার্ট করার মতো আছেন মোরাতা ও জেরার্ড মোরেনো। যদি মোরেনো-মোরাতা তাদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারেন ও তরুণ ডিফেন্ডাররা এনরিকের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেন, তাহলে লা ফুরিয়া রোজাদের নিয়ে ফ্যানরা স্বপ্ন দেখতেই পারেন।


এই গ্রুপের রানার্সআপ হওয়ার একটা ভালো লড়াই হবে পোল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যে। পোল্যান্ডের কথা আসলেই সবার আগে আসবে ১১৯ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬৬ গোল করা পোলিশ তারকা লেওয়ানডস্কির নাম। এটাকে পোল্যান্ডের ভরসার প্রতীক লেওয়া। তবে অন্য ডিপার্টমেন্টেও বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ফুটবলার আছে পোল্যান্ডের। গোলকিপার সেজনি ও ফাবিয়ানস্কি এর মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে ফার্স্ট চয়েজ গোলকিপার হওয়ার। ডিফেন্সে কামিল গিল্ক, মিডফিল্ডে জিয়েলিনস্কিদের মতো প্লেয়ার নিয়ে ভালোই লড়াই করতে পারবে গ্রুপ রানার্সআপ হওয়ার।


পোল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হবে সুইডেন এই লড়াইয়ে। সুইডিশ তারকা ইব্রাহিমোভিচ না থাকলেও আলেক্সান্ডার আইসাক তার অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারবেন বলে আশা করা যায়। আর মিডফিল্ড কন্ট্রোলের দায়িত্বে থাকবেন মার্কাস বার্গ ও এমিল ফোর্সবার্গ।


স্লোভাকিয়া হয়তো গ্রুপের অন্য টিমগুলোর সাথে অতোটা কম্পিট করতে পারবে না, কিন্তু মিলান স্ক্রিনিয়ারের নেতৃত্বাধীন স্লোভাকিয়ার ডিফেন্স ভেদ করতে অন্য দলগুলোর ভালোই পরীক্ষা দিতে হতে পারে। স্লোভাক ডিফেন্স সর্বশেষ ৫ ম্যাচে হজম করেছে মাত্র ৪ গোল।


গ্রুপ এফঃ জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগাল, হাঙ্গেরি


এবারের ইউরোর গ্রুপ অফ ডেথ হলো এই গ্রুপ এফ। টুর্নামেন্টের ৩ টি ফেভারিট দল জার্মানি, পর্তুগাল ও ফ্রান্সের সাথে এই গ্রুপে আছে গত ৩০ বছরে ২য় মেজর টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া হাঙ্গেরি, হাঙ্গেরিকে হয়তো পয়েন্ট শূন্য থেকেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হবে কোন অঘটন না ঘটলে। হাঙ্গেরির সবচেয়ে বর তারকা ডমিনিক সাবোজলাই ইঞ্জুরির কারণে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ায় একটা পয়েন্ট পাওয়াও অনেক বড় সাফল্য হবে হাঙ্গেরির জন্য।


বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের এম্বাপ্পে, গ্রিজমান, কোমান, বেঞ্জেমা, জিরুডদের আক্রমণভাগ যথেষ্ট ফ্রান্সকে ম্যাচ জেতানোর জন্য। এর সাথে মিডফিল্ডে আছে কান্তে ও পগবার মতো প্লেয়ার। রাফায়েল ভারানের নেতৃত্বাধীন ডিফেন্সে ভারানেকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আছে লংলে, কিমপেম্বে, লুকাস হার্নান্দেজ, বেঞ্জামিন পাভার্ডরা। এই তারকাসমৃদ্ধ দলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন না হওয়াটাই হবে একটা অঘটন।


এই গ্রুপ অফ ডেথের তিন ফেভারিটের মধ্যে কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবে হয়তো জার্মানি। এই টুর্নামেন্ট পরেই জার্মানি দলের দায়িত্ব ছাড়বেন কোচ জোয়াকিম লো, টিমটাও বলতে গেলে যাচ্ছে একটা ট্রাঞ্জিশনাল পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে।


এরপরেও গ্রুপে থার্ড হলেও টপ ফোর থার্ড বেস্ট টিমের একটি হয়ে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে কোয়ালিফাই করতে জার্মানির নাম সবার প্রথমেই আসবে। প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টেই আছে বেশ কয়েকজন ভালো প্লেয়ার। গোলকিপার জার্মান ওয়াল নয়ারের সামনে ব্যাকলাইনের নেতৃত্বভার থাকবে চেলসির হয়ে উচলজয়ী রুডিগারের উপর। তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আছেন গোসেন্স, সুলে, হামেলস, গিন্টাররা।জার্মানির মিডফিল্ড বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ড। গোরেতজকা, ক্রুস, গুন্দোগান, কিমিচদের মতো তারকা মিডফিল্ডারদের সবাইকে একসাথে মাঠে নামানোও হয়তো সম্ভব হবে না।এটাকে টিমো ওয়ের্নার তার লাইপজিগের ফর্ম ফিরিয়ে আনতে পারলে জার্মানির জন্য হবে একতা বড় এডভান্টেজ, সাথে লের‍য় সানে, হাভার্টজ, গ্ন্যাব্রি, জামাল মুসিয়ালাদের মতো তরুণ প্লেয়ারদের সাথে থাকবেন অভিজ্ঞ মুলারও। সম প্লেয়ার একসাথে ক্লিক করলে জার্মানি এবার ইউরো জেতার বড় দাবীদার।


এবার গ্রুপ অফ ডেথের সর্বশেষ দল ও শিরোপা জেতার জন্য অন্যতম ফেভারিট পর্তুগালের কথায় আসা যাক। ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকায় এমনেই প্রত্যেক টুর্নামেন্টেই আলাদা নজর থাকে পর্তুগালের দিকে। সর্বশেষ ইউরো জিতেও নিয়েছিলো পর্তুগাল। এবার আরো শক্তিশালী ও প্রতিভাবান ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়েছে পর্তুগাল। ডিফেন্সে গোলকিপার রুই প্যাট্রিসিওর সামনে সেন্টারব্যাক ডুয়োতে থাকবেন এ বছর পোর্তোকে উচলের কোয়ার্টার ফাইনালে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা অভিজ্ঞ পেপে ও এ সিজনের প্রিমিয়ার লীগের বেস্ট সেন্টারব্যাক রুবেন ডিয়াস। সাথে আছেন নেলসন সেমেদো, ক্যান্সেলো, গুরেইরো ও লিলেকে লিগ ওয়ান জেতানো জোসে ফন্টে। মিডফিল্ডে আছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রাণভোমরা ও সময়ের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ। তার সাথে রেনাতো সানচেজ, দানিলো পেরেরা, বার্নার্ডো সিলভারা। ফার্নান্দো সান্তোসের দলে এটাকে মূল হাতিয়ার অবশ্যই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সাথে থাকবেন ডিয়োগো জোতা, জোয়াও ফেলিক্স, আন্দ্রে সিলভারা। এতো প্রতিভাবান প্লেয়ার সমৃদ্ধ দল নিয়ে পর্তুগাল পরিষ্কার ফেভারিট হয়েই ইউরো যাত্রা শুরু করবে।


১১ জুলাই ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে জানা যাবে কার হাতে উঠতে যাচ্ছে ইউরো ২০২০ এর শিরোপা। ততদিন ধরে সারা বিশ্বজুড়ে ফুটবল ফ্যানরা বুঁদ হয়ে থাকবে এই ইউরোপীয়ান ফুটবলের উন্মাদনায়।


ইউরোর মতো কোপা আমেরিকাও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো গত বছর। সাধারণত ৪ বছর পর পর কোপা আমেরিকা আয়োজিত হলেও ২০১৯ কোপা আমেরিকার পর কনমেবল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ইউরোর বছরেই কোপা আয়োজন করার। সেই উদ্দেশ্যে ২০২০ সালের ১২ জুন থেকে ১২ জুলাই আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ায় কোপা আমেরিকা আয়োজনের কথা ছিলো। কিন্তু করোনার থাবায় তা আর সম্ভবপর হয়নি।


করণার কারণে বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ার পর কনমেবল আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়াতেই ২০২১ সালের ১১ জুন থেকে ১১ জুলাই এর মধ্যে কোপা আমেরিকা আয়োজনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দুকে মার্কেজের বিপক্ষে আন্দোলন শুরু হলে ২০ মে কনমেবল নিরাপত্তাজনিত ইস্যুর কারণে কলম্বিয়াকে কো হোস্ট থেকে বাদ দিয়ে আর্জেন্টিনায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আর্জেন্টিনায় কোভিড-১৯ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে ২২ মে থেকে ৯ দিনের লকডাউন দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত কনমেবল ব্রাজিলে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ১ জুন ব্রাজিলের ৪ টি শহরের পাঁচটি স্টেডিয়ামে কোপা আয়োজনের ঘোষণা দেয়।


প্রথমে কথা ছিলো সাউথ আমেরিকার ১০ টি দেশের সাথে এশিয়ান অঞ্চল থেকে কাতার ও অস্ট্রেলিয়া আমন্ত্রিত দল হিসেবে টুর্নামেন্টে অংশ নিবে। কিন্তু এএফসি সেকেন্ড রাউন্ড ও ২০২২ বিশ্বকাপ কোয়ালিফিকেশন এর কারণে উভয় দল ২৩ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়। শেষ পর্যন্ত কনমেবল এই ১০ টি দলকে ভৌগোলিকভাবে দুইটি অঞ্চলে ভাগ করে টুর্নামেন্টের ফরম্যাট দেয়। এই ফরম্যাট অনুযায়ী ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু ও ভেনেজুয়েলা নর্থ জোনে এবং আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, বলিভিয়া, চিলি ও প্যারাগুয়েকে সাউথ জোনে রাখা হয়েছে। উভয় গ্রুপ থেকে টপ ফোর কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য কোয়ালিফাই করবে। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমির পর ১০ জুলাই মারাকানা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই ফাইনালিস্ট।


প্রত্যেকবারের মতো এবারও এই সাউথ আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। ব্রাজিল উদ্বোধনী ম্যাচে আজকে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেছে। এই দুটি দলকে প্রতিযোগিতা দেওয়ার জন্য থাকবে উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়েও।


কোপা আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়তোবা ইউরোর লেভেলে হবে না, এমনকি ব্রডকাস্টিং, মিডিয়া কাভারেজ, মানের দিক দিয়ে তো যোজন যোজন পিছিয়ে থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা এই দুই দল এবং দুই দলের সুপারস্টার মেসি ও নেইমারের ভক্তসংখ্যা অনেক হওয়ায় এই এক মাসজুড়ে বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা শুধু ইউরোতেই নয়, কোপা আমেরিকাতেও বুঁদ হয়ে থাকবে। ফুটবল উন্মাদনায় মেতে থাকার অপেক্ষায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের সকল ফুটবলপ্রেমিকরা।


মন্তব্য করতে লগিন করুন
লগিন
এখনো কোনো মন্তব্য যুক্ত হয়নি!
সম্পর্কিত
এখন থেকে বুয়েটে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল ধরণের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য রক্ষা, শিক্ষার মান … বিস্তারিত


ছাত্রলীগ নির্মমতার শিকার বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ এর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

শহীদ আবরার ফাহাদ কেবল বুয়েটিই নয় বরং গোটা বাংলাদেশের জন্য … বিস্তারিত


ফেরি ডিজাইনে বুয়েটের সাফল্যগাঁথা: আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের জয়যাত্রা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফেরি সেফটি অ্যাসোসিয়েশন (WFSA) বিশ্বজুড়ে নিরাপদ ফেরির … বিস্তারিত


বুয়েটে ফের নিষিদ্ধ হলো লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি

২৮সেপ্টেম্বর, ২০২৪: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একাডেমিক কাউন্সিল সম্প্রতি এক … বিস্তারিত


আবারো ক্লাস -পরীক্ষা বয়কটে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে আশানুরূপ‌ কোন তৎপরতা … বিস্তারিত